আজ শনিবার, ৬ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

টার্গেট চব্বিশ,সর্বোচ্চ তৎপরতা

টি.আই.আরিফ

সুযোগ সন্ধানীরা পিছু ছাড়ছে না! হেভিওয়েট আসন রূপগঞ্জে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রস্তুতি তুঙ্গে। এই আসনে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক। তিনি নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের সদস্য সদস্য হিসেবে টানা সাড়ে ১৪ বছর পার করেছেন। ২০০৮, ২০১৪,২০১৮ সালে আওয়ামীলীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। গাজী ছাড়া রূপগঞ্জে টানা এতদিন ক্ষমতায় থাকার রেকর্ড কারও নেই। নারায়ণগঞ্জ জেলায় আওয়ামী লীগ সরকারের প্রথম মন্ত্রী তিনি। মন্ত্রীর আসনে বিএনপিতে গ্রুপিং লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক এমপি নির্বাচিত হওয়ার পরে মুড়াপাড়া কলেজ সরকারী হয়েছে, ভুলতা ফ্লাইওভার হয়েছে, তারাবতে শীতলক্ষ্যা নদীর উপর সুলতানা কামাল সেতু হয়েছে, মুড়াপাড়ায় শীতলক্ষ্যা নদীর উপর গাজী সেতু হয়েছে। প্রত্যেকটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তিনি নতুন ভবন দিয়েছেন। নতুন রাস্তা নির্মাণ ও পাকা করেছেন। সর্বশেষ রূপগঞ্জের পূর্বাচলে বাংলাদেশের প্রথম পাতাল মেট্টোরেল এমআরটি লাইন-১ এর নির্মাণ কাজ উদ্বোধন হয়েছে।
গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে নেই কোন অনিয়ম ,দুর্নীতির অভিযোগ। মন্ত্রী হিসেবে গত ৪ বছরে স্থানীয় প্রশাসনের উপর তার কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ লক্ষ্য করা যায়নি । বিভিন্ন অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসন ,উপজেলা প্রশাসন,পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা তাঁর প্রশংসা করেন। রাজনীতিতেও তিনি পাকা। তাঁর চেষ্টায় রূপগঞ্জের দুটি পৌরসভা ও ৬ টি ইউপিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছে।
৪র্থ বার সংসদ সদস্য হওয়ার চেষ্টায় আছেন গোলাম দস্তগীর গাজী। সুত্রের খবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় তিনি ভোট কেন্দ্র পরিচালনা কমিটি গঠন করছেন। দলের সাংগঠনিক শক্তি বাড়াচ্ছেন। গণসংযোগ ও সমাবেশে করছেন। দলের নেতাকর্মীরাও মন্ত্রীর পক্ষে । মানবিক কাজেও তিনি অধিক সক্রিয় রয়েছেন। তার নিজ নির্বাচনী এলাকা রূপগঞ্জ উপজেলার কিডনী রোগীদের জন্য বিনা খরচে তিনি কিডনী ডায়ালাইসিস ব্যবস্থা করেছেন। সাধারণ মানুষও বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর এই মহৎ উদ্যোগকে স্বাগতম জানিয়েছে। তার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। বিশেষ করে মহিলা লীগ ও যুব মহিলা লীগ কে অত্যন্ত শক্তিশালী সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলেছেন তিনি। দল মতের উর্ধ্বে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। মন্ত্রী হওয়ার পর তিনি রূপগঞ্জ ছেড়ে যাননি। বিগত ১৪ বছর তাকে কর্মীদের পাশেই দেখা গেছে। করোনাকালে তিনি রূপগঞ্জে গাজী পিসিআর ল্যাব স্থাপন করলে নারায়ণগঞ্জ এবং এর আশেপাশের জেলার মানুষ রক্ষা পায়। নারায়ণগঞ্জের মন্ত্রী হিসেবে তিনি তার দায়িত্ব পালন করেন।
চব্বিশের ভোটকে ঘিরে গোলাম দস্তগীর গাজী ও তার অনুগতরা মাঠে তৎপর। ক্ষমতাসীন দলের দাপটে মাঠ ছাড়া বিএনপি। চলতি বছরেই আপাতত দুইবার রূপগঞ্জে এসেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় নির্বাচনের আগে সুধী সমাবেশকে মহাসমাবেশে রূপ দিয়ে নিজের অবস্থানের জানান দিয়েছেন গোলাম দস্তগীর গাজী। গত ২ ফেব্রুয়ারি রূপগঞ্জের পূর্বাচলে বাংলাদেশের প্রথম পাতাল মেট্টোরেল এমআরটি লাইন-১ এর নির্মাণ কাজ উদ্বোধন উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সমাবেশে এতো লোক দেখে মুগ্ধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। গোলাম দস্তগীর গাজীকে আকার-ইঙ্গিতে বোঝালেন প্রধানমন্ত্রী। ওবায়দুল কাদের বলেন, বেশি নেতার দরকার নেই। গাজী সাহেব আছেন। ডিসেম্বরে ফাইনাল খেলা।
গত ১১ ফেব্রুয়ারি রূপগঞ্জের ৪০ টি স্পটে শান্তি সমাবেশ ও মিছিল করেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী।এর আগে গত ১০ ডিসেম্বর বিএনপির সমাবেশের সময় রূপগঞ্জের রাজপথ দলে রাখেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী। ৩০ টি স্পটে সেদিন প্রতিবাদ মিছিল করেন তিনি। যা নারায়ণগঞ্জের অন্য এমপিদের করতে দেখা যায়নি। ঢাকায় আওয়ামী লীগের দলীয় কর্মসূচি সফল করতে রূপগঞ্জ থেকে ভূমি রাখছে গাজী পরিবার। সর্বশেষ গত ৮ এপ্রিল বিএনপির নৈরাজ্য প্রতিহত করার লক্ষ্যে সারা রূপগঞ্জে শান্তি সমাবেশ ও সন্ত্রাস বিরোধী মিছিল করেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক। তিনি জানান, বিএনপি নেতারা প্রতিনিয়ত আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে। গরীব ,বড়লোক কিচ্ছু বুঝিনা আপনাদের সবার জন্য আমার দরজা খোলা আছে। বুধবার থেকে ৪ দিন আমি রূপসীর বাসায় থাকি। রূপগঞ্জের কোন উন্নয়ন বাদ থাকবে না। বিএনপির বিরুদ্ধে আমাদের ভোট হবে।
অপর এক অনুষ্ঠানে মন্ত্রী জানান, কেউ যদি আমার নামে এক টাকার দুর্নীতির প্রমাণ দিতে পারে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব। নেতা সৎ থাকলে এলাকার উন্নয়ন হয়। নেতা অসৎ থাকলে এলাকায় সন্ত্রাস বাড়ে। যেখানে দুর্নীতি আছে সেখানে উন্নয়ন নেই। যেখানে দুর্নীতি নেই সেখানে উন্নয়ন আছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা একজন সৎ প্রধানমন্ত্রী। তিনি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পা বলেন, গত ১৪ বছর কারও সাথে কোনদিন বেয়াদবি করি নাই। এমপি,মন্ত্রীদের ছেলের মতো আচরণ আমি দেখাইনি। সবার সেবা করতে এসেছি। ভালো সব সময় ভালো। খারাপ, মিথ্যুক এবং যারা শীতের পাখি তাঁরা আসবে ,আমাদেরকে বিরক্ত করবে এবং সময় মতো পালিয়ে যাবে। এবার নির্বাচনে আমাদের শ্লোগান ‘কথা দিয়েছিলাম কথা রেখেছি’।
এছাড়া বিএনপি নেতারাও ক্ষমতায় যেতে চেষ্টা চালাচ্ছে। গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক তার কর্মগুনে বিরোধী দলসহ সাধারণ জনগণও তাকে পছন্দ করেন। রূপগঞ্জের প্রত্যেকটা জায়গায় তার উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে।
অতীতে মতিন চৌধুরীসহ বহু এমপি ,মন্ত্রী বলে গেছে মুড়াপাড়া কলেজ সরকারী হবে না। আর গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক সেই মুড়াপাড়া কলেজ সরকারী করে দেখিয়ে দিয়েছে। এ জন্যই তাকে সবাই রূপগঞ্জের মহাবীর বলে।