নিজস্ব প্রতিবেদক:
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে নিম্ন আদালতের দেওয়া ৫ বছরের সাজার বিরুদ্ধে করা দুদকের রিভিশন আবেদন গ্রহণ করে তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এ মামলায় আপিলকারী অন্য দুই আসামি কাজী সালিমুল হক কামাল ও শরফুদ্দিন আহমেদের আপিলও খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে এ দুই আসামিকে নিম্ন আদালতের দেওয়া ১০ বছরের সাজা বহাল থাকছে।
মঙ্গলবার (৩০ অক্টোবর) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
এসময় রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। তবে খালেদা জিয়ার পক্ষে কোনও আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।
এদিকে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান জানিয়েছেন, খালেদা জিয়া নির্বাচন করতে পারবেন না।
এর আগে সোমবার (২৯ অক্টোবর) আপিল বিভাগ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় অর্থের উৎস নিয়ে করা খালেদা জিয়ার আবেদন হাইকোর্টকে এক দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেন। আপিল বিভাগের সেই নির্দেশনামূলক আদেশ দুদক আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বিকালে হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চে দাখিল করেন।
কিন্তু অর্থের উৎস নিয়ে খালেদা জিয়ার পক্ষে অতিরিক্ত সাক্ষ্য চেয়েও হাইকোর্টে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা উপস্থিত না থাকার বিষয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন দুদক আইনজীবী। এ অবস্থায় সাক্ষ্য চেয়ে করা খালেদা জিয়ার আবেদনটি নামঞ্জুর করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এ মামলায় খালেদা জিয়াসহ মামলার অন্য আসামিদের আপিলের ওপর হাইকোর্টের রায় ঘোষণার জন্য আগামীকাল মঙ্গলবার দিন নির্ধারণ করেন।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর কারাদণ্ডাদেশ দেন বিচারিক আদালত। একইসঙ্গে খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমানসহ মামলার অন্য পাঁচ আসামির প্রত্যেককে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
বাকি চার আসামি হলেন সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, সাবেক সাংসদ ও ব্যবসায়ী কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ এবং জিয়াউর রহমানের ভাগনে মমিনুর রহমান। এর মধ্যে পলাতক আছেন তারেক রহমান, কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান। পাশাপাশি ছয় আসামির প্রত্যেককে দুই কোটি ১০ লাখ টাকা করে জরিমানাও করা হয়।
রায় ঘোষণার পরপরই খালেদা জিয়াকে ওইদিন বিকালে (৮ ফেব্রুয়ারি) নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। এতদিন তিনি সেখানেই ছিলেন। বর্তমানে চিকিৎসার জন্য তাকে বিএসএমএমইউতে (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়) নেওয়া হয়েছে।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণার ১১ দিন পর ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রায়ের সার্টিফায়েড কপি (অনুলিপি) হাতে পান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। এরপর ২০ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়। একইসঙ্গে এ মামলার অন্য দুই আসামি কাজী সালিমুল হক কামাল ও শরফুদ্দিন আহমেদ খালাস চেয়ে আপিল করেন। পাশাপাশি এ মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা বৃদ্ধি চেয়ে রিভিশন আবেদন করে দুদক।