বিশেষ প্রতিবেদকঃ
জালকুঁড়ি মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্র এবং শিশু – মাতৃ স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ভবনের জরাজীর্ণ দশা দীর্ঘদিনের। ৮ বিঘা জমির উপর দাঁড়িয়ে থাকা কাঠামো বাহির থেকে দেখতে বেশ সুন্দর মনে হলেও ভেতরে তার অবস্থা উল্টো। পলেস্তারা খসে পড়ছে দেয়াল থেকে। বৃষ্টির পানিতে নষ্ট হয়ে আছে ভবনের সিলিং ও দেয়াল। এর মাঝেই গর্ভবতী মায়েদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে দুইটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা।
১৯৭৬ সালে জমি পাবার পরে তৈরী হয় এই কাঠামো। ধাপে ধাপে তৈরি হওয়া পুরো ভবনটির বয়স এখন ৩৫ বছর। তবে একটি সাধারণ ভবন ৩৫ বছরে এতটা জরাজীর্ণ হবার পেছনে রয়েছে সংশ্লিষ্ট দফতরের অবহেলা ও অযত্ন। রাষ্ট্রিয় মালিকানাধীন এই ভবনটি নিয়ে দুইটি প্রতিষ্ঠানের মাঝে টানাটানি থাকার কারনে কেউই সংস্কার কাজে হাত দিতে পারেননি। কোন কোন প্রতিষ্ঠান পুরো ভবনের সংস্কার করার উদ্যোগ নিতে চাইলেও দাপ্তরিক জটিলতায় তা আটকে যায়। ক্রমশই ভবনটি দুর্বল হয়ে পড়ায় আশঙ্কা জন্মেছে যেকোন মূর্হুর্তে বন্ধ হয়ে যেতে পারে উভয় প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম।
সরজমিনে দেখা যায়, ভবনটির উত্তর পাশে কয়েকটি কক্ষ নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছে শিশু – মাতৃ স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট। যদিও করোনার কারনে তাদের সেবাদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। একই ভাবনের দক্ষিণ পাশে কাজ চালাচ্ছে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ ও তার আওতাধীন মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্র। কিন্তু স্থান সল্পতার অভাবে পূর্নাঙ্গ সেবা দিতে পারছে না মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্র। কিন্তু শিশু – মাতৃ স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট তাদের বর্হিবিভাগ পরিচালনায় পর্যাপ্ত স্থান পেলেও তা কাজে লাগাতে পারেনি।
এনিয়ে যোগাযোগ করা হলে শিশু – মাতৃ স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের জনসংযোগ বিভাগের কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমরা মূলত এখান থেকে ডাক্তার পাঠিয়ে শাখা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছি। জালকুঁড়িতে শাখা পরিচালনার জন্য বাড়তি কোন লোকবল আমাদের নেই। আর সে কারনেই এবার করোনায় ডাক্তার বসতে পারেনি। তাছাড়া সেখানে একটি জেনারেল হাসপাতাল হবার কথা রয়েছে। পুরাতন ভবন ভেঙ্গে নতুন হাসপাতাল তৈরী হলে ভিন্ন আঙ্গিকে একটি প্রতিষ্ঠান তৈরী হবে স্থানটিতে। স্থানীয়রাও পাবেন জেনারেল হাসপাতালের সব সুবিধা।
একই বিষয়ে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ পরিচালক বসির উদ্দিন বলেন, এখানে বেশ কিছু প্রস্তাবনা উঠছে। কিন্তু কোনটিই আলোর মুখ দেখছে না। কখনও বলা হচ্ছে জেনারেল হাসপাতাল, আবার কখনও বলা হচ্ছে ২০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যান হাসপাতাল। এসকল প্রস্তাবনা তখনই বাস্তব রূপ নেয়া সম্ভব যখন শিশু – মাতৃ স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট আমাদের কাছে ভবনটি হস্তান্তর করবে। তাহলে একটি নির্ধারিত লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।