নিজস্ব প্রতিবেদক, নারায়ণগঞ্জঃ উপজেলা সহকারি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত নির্বাচনেই সভাপতি নির্বাচিত হয়ে গেছে। কিন্তু সেটি বাতিল না করেই কোনো কারন ছাড়াই একদিন পরেই আবারো সিদ্ধিরগঞ্জের চিত্তরঞ্জন কটন মিলস উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি পদে নির্বাচন ঘোষনা করা হয়েছে। লিখিত ঘোষনাটি করেছেন আর কেউ নন উপজেলা সহকারি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার। এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ তৈরী হয়েছে সিদ্ধিরগঞ্জে। অভিযোগ উঠেছে উপজেলা সহকারি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে সভাপতি প্রার্থী নূর আলির পক্ষের কাজ করতে গিয়ে এই তুঘলকি কান্ড ঘটিয়েছেন।
এ নির্বাচনে সভাপতি নির্বাচিত হওয়া স্কুল কমিটির বর্তমান সভাপতি বি এম আমির হোসেন জানান, সিদ্ধিরগঞ্জের চিত্তরঞ্জন কটন মিলস উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদে গতকাল ১০ অক্টোবর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে তার প্রতিদ্বন্দ্বি ছিলেন ১০ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও স্কুল কমিটির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ নূর আলি। সভাপতি পদের নির্বাচনটি স্কুলে অনুষ্ঠিত হলে নূর আলী আওয়ামীলীগের লোক হওয়ায় প্রভাব বিস্তার করতে পারেন- এ আশংকায় সভাপতি প্রার্থী বি এম আমির হোসেন নির্বাচনটি উপজেলা শিক্ষা অফিসে করার আবেদন জানান। সে অনুযায়ী মঙ্গলবার বেলা বারোটা থেকে একটা পর্যন্ত উপজেলা শিক্ষা অফিসে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন উপজেলা সহকারি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল গনি। নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা মোট এগারোটি। এর মধ্যে একজন অনুপস্থিত ছিলেন। নিয়ম অনুযায়ী শুধু টাই হলে প্রধান শিক্ষক ভোট দিতে পারবেন। তাই তিনি প্রথমে ভোট দানে বিরত থাকেন। একটি ভোট বাতিল হয়। বি এম আমির হোসেন আটটি ভোটের মধ্যে চারটি ও প্রতিদ্বন্দ্বি নূর আলি চারটি ভোট পান। প্রধান শিক্ষক একটি ভোট বিএম আমির হোসেনকে প্রদান করেন। ফলে তিনি স্কুল কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন। নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসার ও উপজেলা সহকারি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল গনি নির্বাচন শেষে তাদের জানান, নির্বাচনের ফলাফল টাইপ করতে একটু দেরী হবে। তিনি প্রধান শিক্ষক মনি শংকর হালদারকে বসে থেকে ফলাফল নিয়ে যেতে বলেন। কিন্তু পরে তিনি ফলাফল না দিয়ে বুধবার স্কুলে আবারো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে একটি চিঠি ধরিয়ে দেন প্রধান শিক্ষকের হাতে। তিনি অভিযোগ করেন, উপজেলা সহকারি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে সভাপতি প্রার্থী নূর আলির পক্ষের কাজ করতে গিয়ে এই তুঘলকি কান্ড ঘটিয়েছেন।
অভিযোগের ব্যাপারে উপজেলা সহকারি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল গনি এর মোবাইল কথা বলতে বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে কথা বলতে প্রতিদ্বন্দ্বি সভাপতি প্রার্থী মোহাম্মদ নূর আলীর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি স্বিকার করেন মঙ্গলবার সভাপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে নির্বাচনে তার প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতেই তিনি দশ মিনিট পরে আবার ফোন করতে বলেন। এরপর একাধিকবার তার মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
নূর আলী সিদ্ধিরগঞ্জে এমপি শামীম ওসমানের লোক হিসেবে পরিচিত।