আজ রবিবার, ১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১লা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

গণমাধ্যমের সঙ্গে সম্পৃক্তরা ভালো নেই: পাপ্পা গাজী

 সংবাদচর্চা রিপোর্ট: গাজী গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরুণ শিল্প উদ্যোক্তা বিসিবি ও যমুনা ব্যাংকের পরিচালক গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পা বলেছেন, শিক্ষকরা জাতি গড়েন। সাংবাদিকরা মানুষের কাছে সত্য পৌঁছে দেন। আর ডাক্তাররা সবাইকে সুস্থ রাখেন। তাই বাস্তবতা হলো সাংবাদিক ডাক্তার শিক্ষকরা যখন ভালো থাকবেন, তখন আমাদের দেশ ভালো থাকবে।বুধবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে জাতীয় জাদুঘরের নলিনীকান্ত ভট্টশালী গ্যালারিতে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার (বিজেসি) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। ‘চিত্রকর্ম ও আলোকচিত্রে করোনায় গণমাধ্যমের লড়াই’ শীর্ষক তিন দিনের প্রদর্শনীর সমাপনী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে গোলাম মর্তুজা পাপ্পা বলেন, আমরা যারা গণমাধ্যমের সঙ্গে সম্পৃক্ত, তারা প্রকৃতপক্ষে ভালো নেই। সত্যিকার অর্থে আমরা ভালো নেই। আমাদের হাজার হাজার গণমাধ্যমকর্মী চাকরি হারিয়েছেন। আমরা যারা প্রতিষ্ঠান চালাই, তাদের বেতন দিতে কষ্ট হয়, বাড়িভাড়া দিতে কষ্ট হয়। আমাদের স্যাটেলাইট ভাড়া দিতে কষ্ট হয়। আপনারা এই বিষয়গুলোর বিবেচনা করবেন। তিনি বলেন, সেদিন আমাকে একজন সাংবাদিক বললেন— ভাই, বাসা ভাড়া দিতেই কষ্ট হয়। ছোটবেলায় আমাদের যখন রচনা লিখতে দিত আমার জীবনের লক্ষ্য, অনেকেই অনেক কথা লিখত। কেউ লিখত ডাক্তার হতে চায়, কেউ ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়, কেউ সাংবাদিক হতে চায়, কেউ পাইলট হতে চায়। প্রতিমন্ত্রী মহোদয়, এখন হয়তো আর কেউ সাংবাদিক হতে চায় লেখেই না। ফেসবুক ও ইউটিউবকে নির্ভর করে অনেকেই বিভিন্নভাবে খবর প্রচার করে যাচ্ছেন। এসব মাধ্যম বন্ধ করে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে পাপ্পা গাজী বলেন, দয়া করে ফেসবুক ও ইউটিউব জার্নালিজম বন্ধ করে দেন। আমরা যারা গণমাধ্যম চালাই, তারা ভ্যাট দেই, ট্যাক্স দেই। দেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু ফেসবুক ও ইউটিউবে যারা নানা ধরনের তথ্য ছড়াচ্ছেন, তার তো কোনো সত্যতা নেই। করোনা পরীক্ষার ল্যাব স্থাপনের কথা তুলে ধরে গাজী গোলাম মর্তুজা বলেন, করোনার সময় আমরা বসে ছিলাম না। একদিন বাবা বললো, কিছু লোকের তো ঘর থেকে বের হতেই হয়। আমাদের ডাক্তার, পুলিশ ও গণমাধ্যমকর্মীরা আছেন। সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠে পত্রিকা হাতে নিয়ে খাচ্ছি। কিন্তু যাদের ঘরের বাইরে যেতেই হচ্ছে, তাদের কী হবে? বাবা বললেন, তোমরা যত দ্রুতসম্ভব কিছু করো। সবকিছুর দাম তখন কয়েকগুণ বেশি। বাবা বললেন, যেভাবে পারো ম্যানেজ করো।পাপ্পা গাজী বলেন, আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম— করোনা পরীক্ষার ল্যাব করব। কিন্তু মানুষের মিছিল, ল্যাব করতে দেবে না। তিনটি স্থান পরিবর্তন করে পূর্বাঞ্চলের নির্জন এলাকায় আমরা ল্যাব করলাম। এরপর যাকেই বলি চাকরি করতে, তারা বলে করোনার পরে চাকরি দেন, করোনার সময় চাকরি করব না। যত টাকাই বেতন দিতে চাই, করোনা ল্যাবের কথা শুনলে আর কেউ চাকরি করতে রাজি হয় না। আমরা অনেক কষ্টে সবকিছু ম্যানেজ করেছি। আসলে করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট দেওয়া এত সহজ না।

তিনি আরও বলেন, আমাদের নারায়ণগঞ্জ রেড জোন থেকে গ্রিন জোনে চলে এসেছে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি করোনার দ্বিতীয় ধাপ চলে আসছে। বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে জনগণকে সচেতন করা হচ্ছে। আমি সব জায়গায় একটা কথা বলি— আমি মাস্ক পরি, কারণ আমি বাংলাদেশকে ভালোবাসি। কারণ যেসব দেশ মাস্ক পরে করোনা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে, তারা কিন্তু অর্থনৈতিক দিক দিয়ে অনেক এগিয়ে গিয়েছে। আমিও চাই আমার শিশু স্কুলে যাক। সকাল বেলায় যখন দেখি আমার বাচ্চা স্কুলে যেতে পারছে না, আমারও খারাপ লাগে। আজ যদি দেখি আমাদের দেশে এক্সপোর্ট হচ্ছে না, আমার আসলে তখন কষ্ট লাগে। এ কারণে আমি সবাইকে অনুরোধ করি মাস্ক পরতে। ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের ট্রাস্টি রাহুল রাহার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এনামুল হক, ডা. তুষার, বাঁধন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান রাকিব আহমেদ, পাথওয়ের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আহমেদ, শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটের ডা. আফরাফুল হক, ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের ট্রাস্টি নজরুল কবীর, সদস্য সচিব শাকিল আহমেদ,দৈনিক সংবাদচর্চার প্রকাশক ও সম্পাদক মো: মুন্না খাঁন প্রমুখ।

সর্বশেষ সংবাদ