নিজস্ব প্রতিবেদক:
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার খালেদা জিয়ার রায়কে কেন্দ্র করে আদালতপাড়ায় পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি করেছে আওয়ামীলীগ ও বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। রায়ের পক্ষে কর্মসূচি করেছে আওয়ামীলীগ এবং বিপক্ষে কর্মসূচি করেছে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা।
সোমবার (২৯ অক্টোবর) নারায়ণগঞ্জের আদালত পাড়ায় দলে দলে বিভিন্ন আইনজীবীরা সমবেত হয়ে রায়ের প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে। এর আগে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাত বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেয় রাজধানীর একটি আদালত। পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের অস্থায়ী আদালতের বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন।
বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের হয়ে এড. সাখাওয়াত হোসন বলেন, এই সরকার অবৈধ সরকার। এই সরকার বেগম খালেদা জিয়ার মিথ্যা মামলার যে রায় দিয়েছে তা অবৈধ। খালেদা জিয়া মিথ্যা মামলার যে ফরমায়েশি রায় দেওয়া হয়েছে আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাই। আজকে তাড়াহুড়া করে মিথ্যা সাজা প্রদান করা হয়েছে। আগামীতে যে নির্বাচন হবে তাতে বেগম খালেদা জিয়া দাড়ালে, নির্বাচনী প্রচারণা চালালে এই সরকারের পায়ের নিচে মাটি থাকবে না। তাই আজ আদালতে বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলার জন্য ৭ বছরের শাস্তি দেওয়া হয়েছে। আমরা নেত্রীকে এই সাজা থেকে মুক্ত করবো।
এড. হুমায়ন কবির বলেন, কিছুক্ষণ পূর্বে বেগম খালেদা জিয়ার মিথ্যা মামলার সাজা দিয়েছে। বর্তমান সরকার দেশের সম্পদ লুটপাত করে আবারও ক্ষমতায় আসতে চায়। তাই যারা তার বিরুদ্ধে রুখে দাড়াবে, এই সরকার তাদের মিথ্যা মামলায় আটক করে আবারও ক্ষমতায় আসতে চায়। আমরা খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করবো। আমরা এই অবৈধ সরকার দূর করবো।
আইনজীবী ঐক্য পরিষদের নেতা এড. রফিক আহমেদ বলেন, এই দেশের নাগরিকদের হতাশ হবার কিছু নেই। শেখ হাসিনার সরকারের বিচার বিভাগ মিথ্যা মামলার যে রায় দিয়েছে তা জনগণ মেনে নেয় নি, জনগণ মেনে নিবেও না। শেখ হাসিনার সরকারের সময় শেষ, বিএনপি জাগরণ হবে। আমরা জননেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবো।
অন্যদিকে আওয়ামীপন্থি আইনজীবীদের হয়ে আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা বলেন, বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা হলো অত্যন্ত শক্ত। কিন্তু একটি বিশেষ মহল বিচার ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য গতকাল সাংবাদিক সম্মেলন করেছে। বিচার ব্যবস্থার মান বজায় রাখার জন্য আমরা কাজ করে যাব। কিছু সময় পূর্বে বেগম আদালতের সম্মতি জানাই এবং সম্মান প্রদর্শন করি। এ রায়কে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলা করলে আমরা তাদের প্রতিহত করব।
আওয়ামীলীগের জাতীয় কমিটির সদস্য এড. আনিছুর রহমান দিপু বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার আইনের সুশাসনে বিশ্বাস করে। আইনের শাসনে বিশ্বাস করে বিধায় ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় জনগণের নেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার যে চেষ্টা করা হয়েছিল, নেত্রীর শাসনামলে আমরা তার পাল্টা হামলা করতে পারতাম। কিন্তু নেত্রীর নির্দেশ ও নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় তাদের বিচার হয়েছে। আজ খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেখ জিয়ার সাজা হয়েছে। আমরা আদালত থেকে দেওয়া রায়ের প্রতি সম্মান ও সম্মতি জানাই। কিন্তু এই সাজাকে কেন্দ্র করে আমাদের মধ্যে কিছু আইনজীবী যারা সংবিধান মানেন না, আইন মানেন না তারা নাশকতা করতে চাচ্ছে। তাদের বিপক্ষে আদালত রায় দিলে ফরমায়েসি ও পক্ষে রায় দিলে বিচারক খুব সাহসী। তারা যদি আইনের পবিত্রতা নষ্ট করতে চায় আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের প্রতিহত করবো।