বিশেষ প্রতিবেদক
মদের বার বন্ধে ডিসি এসপির কাছে দ্বারস্থ হয়ে দাবী আদায় করতে না পারায় এবার স্থানীয় সাংসদ ও তৌহিদী জনতার উপরে ভরসা রেখেছেন ওলামা পরিষদের নেতৃবৃন্দ। এর আগে, একাধিকবার মদের বার বন্ধে তারা প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করলেও শেষ পর্যন্ত প্রশাসন নিরুপায় বলে মন্তব্য করেছেন জেলার সর্বোচ্চ ওলামা নেতা। ইতোমধ্যে বিভিন্ন দপ্তরকে আর্থিকভাবে ম্যানেজ করে ফেলায় ক্ষুব্ধ আলেম সমাজ মদের বার বন্ধে কঠোর হবার ঘোষণা দিয়েছে। আগামী ৭ দিনের ভেতর বারের কার্যক্রম বন্ধ না করলে অবস্থান কর্মসূচী করে এই মদ বিক্রির কেন্দ্র বন্ধ করে ছাড়বেন।
এদিকে মদের বার বন্ধের জন্য এবার ওসমান ভ্রাতৃদ্বয়ের সহায়তা চেয়েছেন ওলামা পরিষদের নেতা মাওলানা আব্দুল আউয়াল। সমাবেশে বক্তব্য প্রদানকালে তিনি বলেন, আমি এমপি সেলিম ও শামীম ভাইকে বলতে চাই, আপনারা চাইলেই এই বার বন্ধ করে দিতে পারেন। আপনারা পতিতাপল্লী উচ্ছেদ করেছেন। আমরা প্রত্যাশা করবো এই নেশাকে সমাজ থেকে আপনারা উৎখাত করবেন। আমরা বিশ্বাস করি আপনার সুনজরেই পারে এর সমাধান নিয়ে আসতে। আমাদের আর উত্তেজিত করবেন না। আমাদের যাতে পুনরায় মাঠে আসতে না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন।
একই ভাবে প্রতিষ্ঠানটির ট্রেড লাইসেন্স দেয়ায় মেয়র আইভির সমালোচনাও করেন তিনি, তিনি মেয়রের সমালোচনা করে বলেন, আমরা জানতে পেরেছি মেয়র মহোদয় পৌরসভা থেকে এই মদের বারের লাইসেন্স দিয়েছেন। আপনারা কি মুসলমানের সন্তান? আল্লাহ মদকে হারাম করেছে, যারা ক্ষমতাবলে মদ বিক্রির লাইসেন্স দেয় তাদের মুসলমানিত্ব থাকেনা।
তার এমন বক্তব্যের পর নারায়ণগঞ্জের আলেম সমাজের পাশাপাশি রাজনৈতিক বলয়েও আলোচনা তৈরী হয়েছে। দীর্ঘদিন পরে হেফাজত বা ওলামা নেতৃবৃন্দ কোন একটি ইস্যুতে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এতে করে কেউ কেউ বিষয়টি বাঁকা চোখে দেখলেও মদের বার বিরোধী তৌহিদী জনতা স্বাভাবিক ভাবেই গ্রহণ করেছেন ওলামা নেতার বক্তব্যকে।
এর আগে, নারায়ণগঞ্জে মদের বারের বিরুদ্ধে প্রথম অবস্থান গ্রহণ করেন নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহবুবুর রহমান মাসুম। এর পর তিনি বিভিন্ন সভায় এই বার বন্ধের দাবী জানিয়েছেন। মসজিদের পাশে এমন একটি মদ বিক্রয় কেন্দ্র কোনভাবেই মেনে নেয়ার মত নয় বলে বার বার উল্ল্যেখ করেছেন। এর পরপরেই নারায়ণগঞ্জের বেশকিছু গণমাধ্যম এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। তবে ২৯ জানুয়ারি ব্লু পিয়ার রেস্তোরা উদ্বোধনের পরেই রহস্যজনক কারনে থমকে যায় বারের বিরুদ্ধাচারন। তবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সহ বেশ কিছু ইসলামী দল এর বিরুদ্ধে অবস্থান অব্যাহত রাখে।
সবশেষ ৭ ফেব্রুয়ারি বাদ জুমা নারায়ণগঞ্জের ডিআইটিতে বিশাল গনসমাবেশ করে নারায়ণগঞ্জ ওলামা পরিষদ। এসময় ওলামা নেতারা প্রশাসন সহ বিভিন্ন দফতরের সমালোচনা করে কঠোর হুঁশিয়ারি দেন। এসময় এসপির সমালোচনা করে ওলামা পরিষদের সভাপতি আব্দুল আউয়াল বলেন, এই জেলার এসপি আমাদের আশ্বস্থ করেছিলেন যে শহরে মদের বার চালু হবে না। তিনি আমাকে স্পষ্টভাবে বলেন যে তারা (ব্লু পিয়ার) যদি মদের বার চালু করে তবে আপনাদের সামনে রেখে এই বার ভেঙ্গে দেয়া হবে। কিন্তু গতকাল তিনি বললেন যে, বড় দুঃখের বিষয় হুজুর, তারা উপর থেকে অনুমোদন নিয়ে এসেছে। একজন এসপি যখন উপরের কথা বলেন তখন স্বাভাবিক ভাবেই স্পষ্ট যে তাদের পায়ের নিচে মাটি নেই। উনারা সাধারণ মানুষের উপর গুলি টিয়ারশেল মারতে পারেন। আমরা আমাদের আল্লাহ ও তার রাসুলের বিধান নিয়ে মাঠে নেমেছি, আমরা এর উত্তম জবাব দিতে জানি।