আজ বৃহস্পতিবার, ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

কৌশলে আগাচ্ছেন তারা

সংবাদচর্চা রিপোর্ট :
আসন্ন বন্দর উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হতে মাঠে সক্রিয়তা দেখাচ্ছেন বেশ কয়েকজন নেতা। যাদের মধ্যে বন্দর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজিম উদ্দিন প্রধান, মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন ও মদনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম.এ গাজী সালাম।
এদের ছাড়াও আরো বেশ কয়েকজন প্রার্থী নিজেদের প্রার্থীতার কথা জানান দিলেও মাঠে এখন পর্যন্ত সক্রিয়তা দেখাননি।
ইতোমধ্যে নিজের নির্বাচনী মত বিনিময় সভা করে সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন। তার নির্বাচনী সভায় উপস্থিত হয়ে বির্তকের মুখে পড়েছেন দুইজন আওয়ামী লীগ নেতারাও। তারা হলে বন্দর থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুম আহম্মেদ এবং ধামগড় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম। এদের মধ্যে দুইজনই বর্তমানে জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করছেন। একজন জেলা পরিষদের সদস্য পদে রয়েছন অপরজন রয়েছেন সিটি কর্পোরেশনের ২৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে। এ বির্তকের সব থেকে বড় কারন হচ্ছে মাকসুদ হোসেন চেয়ারম্যানের বাবা রফিক ছিলেন একজন কুখ্যাত রাজাকার। মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বে দেওয়া দলের নেতা হয়ে নিজ দলের সভাপতির বিরুদ্ধে গিয়ে একজন কুখ্যাত রাজাকার পুত্রের পক্ষে নির্বাচনী সভায় অংশ নেওয়ায় এই বির্তকের সৃষ্টি হয়েছে।
মদনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম.এ গাজী সালাম নিজের নির্বাচনে প্রচারনা নীরবে এগিয়ে নিচ্ছেন। এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক ভাবে তিনি কোন সভা না করলেও ইতোমধ্যে তাঁর পক্ষে মাঠে নেমেছেন একসময়কার সহপাঠীরা। ব্যাচ-৯৫ নামের একটি সংগঠন তাদের এই সতীর্থের জন্য মাঠে কাজ করছেন। তবে এই সংগঠনটি শুধু মদনপুর ভিত্তিক নয় বন্দর উপজেলার আওতাধীন ৫টি ইউনিয়ন এলাকাতেই কাজ করে যাচ্ছেন। নিজেদের স্কুল জীবনের সহপাঠীকে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে আসীন করতে তারা কাজ করে যাচ্ছেন নীরবে।
বুধবার কলাগাছিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আয়োজনে মত বিনিময় সভায় থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজিম উদ্দিন প্রধানের নির্বাচন করার ব্যাপারটি আনুষ্ঠানিক খোলাসা করেন। তবে তিনি এখানে গুরুত্বপূর্ন ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেন, আপনারা আমাকে উপজেলা চেয়ারম্যান বানাতে চাচ্ছেন। কিন্তু নির্বাচন আসলেই আমাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু হয়। তাই আমার দুইজন অভিভাবক আছেন তারা হলে এমপি সেলিম ওসমান ও এমপি শামীম ওসমান। উনারা আমাকে যে নির্দেশনা দিবেন আমি সেই নির্দেশনা মেনেই চলবো।
কাজিম উদ্দিনের এমন বক্তব্য তার প্রতি ওসমান ভ্রাতৃদ্বয়ের সবুজ সংকেত রয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন।
অপরদিকে এখন পর্যন্ত নিরব ভূমিকায় রয়েছেন আরেক প্রার্থী বন্দর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান এবং বিএনপি থেকে বহিস্কৃত নেতা আতাউর রহমান মুকুল। এখন পর্যন্ত মুকুলের পক্ষ থেকে কোন প্রকার উদ্যোগ নিতে না দেখা গেলেও তাঁর রয়েছে বিশাল ভোট ব্যাংক। নির্বাচনে যে কোন প্রার্থীকে তিনি ধরাশায়ী করে দিতে পারেন বলে মনে করেন বন্দরের আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, বিএনপি সকল দলের তৃনমূলের নেতাকর্মীরা।
তবে ভোটের মাঠে অনেকটাই দুর্বল বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান এবং থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম.এ রশিদ। দীর্ঘ দিন তিনি সভাপতির দায়িত্বে থাকলেও নিজস্ব কোন কর্মী সমর্থক তৈরি করতে পারেননি। অপরদিকে উপজেলা পর্যায়ের বেশ কিছু শীর্ষ নেতার সাথে বিরোধে জড়িয়েছেন। সেই বিরোধ প্রকাশ্যে না দেখা গেলেও থানা আওয়ামী লীগের অনেক শীর্ষ নেতার সাথেই তাঁর রয়েছে বৈরী সম্পর্ক রয়েছে অর্ন্তদ্বন্দ্ব।
একই অবস্থা জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ও বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ সানুরও। তাই ভোটের মাঠে তেমন প্রতিদ্বন্দ্বীতা তিনিও গড়ে তুলতে পারবেন না বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
আর দেলোয়ার হোসেন প্রধান এখন পর্যন্ত কোন আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম না দেখালেও তাঁর ঘনিষ্ট সূত্র থেকে জানা গেছে এমপি সেলিম ওসমানের সবুজ সংকেত না পেলে তিনি হয়তো নির্বাচনে প্রার্থী হবেনা।
তবে দেলোয়ার হোসেন প্রধান শেষ পর্যন্ত নিজে প্রার্থী না হোন এক্ষেত্রে নিজ অন্যান্য প্রার্থীর জয় পরাজয়ের ব্যাপারে তিনি ব্যাপক গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখতে সক্ষম বলে মনে করছেন অনেকে। কারন উপজেলার আওতাধীন ৫টি ইউনিয়নের মধ্যে কলাগাছিয়া ইউনিয়ন এলাকায় ভোটার সংখ্যা সব থেকে বেশি এবং তিনি এই ইউনিয়নে টাকা ১৫ বছর ধরে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। একই এলাকা থেকে প্রার্থী হচ্ছেন কাজিম উদ্দিন প্রধান। যিনি গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দেলোয়ার হোসেন প্রধানের সাথে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পরাজিত হয়ে ছিলেন। এক্ষেত্রে আগামীতে নিজের পথ পরিস্কার রাখতে দেলোয়ার হোসেন প্রধান কাজিম উদ্দিনের পক্ষে ভূমিকা রাখতে পারেন বলে মনে করছেন অনেকে।