নিজস্ব প্রতিবেদক:
ভারতে লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা চলছে। মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় রাত ১০ টা ১৯ মিনিট পর্যন্ত ৩৯৭টি আসনের চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৯০টিতে জয় পেয়েছে ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। ৭৩টি আসনে জয় পেয়েছে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস। অন্য দলগুলোর মধ্যে সমাজবাদী পার্টি (এসপি) ৩০ টি, তৃণমূল কংগ্রেস ২১টি, ডিএমকে ৮টি, জনতা দল (জেডি-ইউ) ১০টি, তেলেগু দেশম পার্টি (টিডিপি) ৬টি, সিপিআই (এম) ৪টি, শিবসেনা (উদ্ভব) ৬টি, শিবসেনা (এসএইচএস) ৪টি ও আম আদমি পার্টি ৩টি আসনে জয় পেয়েছে।
এবারের নির্বাচনে প্রধানত দুটি জোটে বিভক্ত হয়ে লড়াই করছে দেশটির রাজনৈতিক দলগুলো। একটি হচ্ছে- ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট। অন্যটি হল- বিরোধীদল কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোট।
নির্বাচনি ফলাফলে দেখা যাচ্ছে- ক্ষমতাসীন বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা (২৭২ আসনে জয়) পাচ্ছে না। সেক্ষেত্রে জোটগতভাবে সরকার গঠন করতে হবে। এক্ষেত্রে ভিন্ন সমীকরণও দেখা যেতে পারে। বিজেপি এগিয়ে আছে ২৪০ আসনে, কংগ্রেস এগিয়ে আছে ৯৯ আসনে। কংগ্রেস জোট এগিয়ে আছে ২৩২ আসনে। বিজেপি জোট এগিয়ে আছে ২৯৩ আসনে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ক্ষমতাসীন বিজেপির এনডিএ জোটের চেয়ে ৫০টির মতো আসনে পিছিয়ে রয়েছে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোট। এমন পরিস্থিতিতে এনডিএ জোটের ভেতরে-বাইরের বেশ কয়েক নেতার সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে কংগ্রেস।
হিন্দুস্তান টাইমস জানতে পেরেছে, এনডিএ জোটের শরিক অন্ধ্র প্রদেশের তেলেগু দেশম পার্টির (টিডিপি) প্রধান চন্দ্রবাবু নাইডু এবং বিহারের জনতা দল ইউনাইটেডের (জেডি-ইউ) প্রধান নীতীশ কুমারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন কংগ্রেস প্রধান মল্লিকার্জুন খাগড়ে। এছাড়া ওডিশার নবীন পাটনায়েকের বিজু জনতা দল (বিজেডি) এবং বিহারের লোক জনশক্তি পার্টির (রাম বিলাস) সঙ্গেও কথা হয়েছে তার।
বিহারে সবাইকে অবাক করে দিয়ে ১৫টি লোকসভা আসনে এগিয়ে রয়েছে নীতীশ কুমারের দল। রাজ্যটিতে বিজেপি পাচ্ছে মাত্র ১৩টি আসন। একই জোটের দুই দল হিসেবে জেডি-ইউ বিজেপির প্রতি সমর্থন দিয়ে আসছে। তবে নীতীশের সঙ্গে খাগড়ের যোগাযোগের বিষয়ে জেডি-ইউ’র এক নেতা হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেছেন, তার দলের অবস্থান বদলের সম্ভাবনা কম।
নীতীশ কুমার এ বছরেই এনডিএ জোটে যোগ দিয়েছেন। এর আগে তিনি ইন্ডিয়া জোটের শীর্ষস্থানীয় একজন নেতা ছিলেন। কংগ্রেসের এক নেতা বলেছেন, আজ মঙ্গলবার নীতীশ কুমারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা সম্রাট চৌধুরী। কিন্তু তিনি দেখা করেননি।
কংগ্রেস নেতাদের আশা, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডেকেও ইন্ডিয়া জোটে যোগ দেওয়ার বিষয়ে রাজি করাতে পারবেন তারা। শিন্ডের নেতৃত্বাধীন শিবসেনা রাজ্যটিতে বেশ কয়েকটি আসনে জয় পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ২টিতে চূড়ান্ত ফলে জয় পেয়েছে। ওই সময় পর্যন্ত চারটি আসনে এগিয়েছিল দলটি। এছাড়া শিবসেনার আরেক অংশের নেতা উদ্ভব ঠাকরের সঙ্গেও তাদের কথা হয়েছে। উদ্ভব ঠাকরের দলও ১০টি আসনে জয় পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৪টি আসনে চূড়ান্ত ফলে জয় পেয়েছে দলটি। বাকি ৬টিতে এগিয়েছিল।
বিজেডির নবীন পাটনায়েক বিজেপি বা কংগ্রেস—দুই দলের থেকেই সমান দূরত্ব বজায় রেখেছিল। তবে হিন্দুস্তান টাইমস জানতে পেরেছে, ওডিশা বিধানসভায় নিজেদের সুযোগ বাড়ানোর জন্য কংগ্রেসের সহায়তা চেয়েছে বিজেডি। ২০১৯ সালে রাজ্যটির বিধানসভায় কংগ্রেসের আসন ছিল নয়টি। তবে এখন দলটির দখলে ১৬টি আসন রয়েছে। সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস