নিজস্ব প্রতিবেদক
আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে উৎসব ও উত্তেজনায় ঠাসা নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সিটির ১৯২টি কেন্দ্রে একযোগে চলবে বহুল আলোচিত এই ভোটযুদ্ধ।
গতকাল বেলা ১২টা থেকেই কেন্দ্রেগুলোতে পাঠানো হয়েছে নিরাপত্তায় নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের। দুপুরের মধ্যেই ভোটকেন্দ্রে পৌছেছে ভোটের সরঞ্জামও। শনিবার বেলা ১১টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ লাইনে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম এবং রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহফুজা আক্তার।
এবারের নির্বাচনে সাতজন মেয়র পদপ্রার্থী আছেন। তারা হলেন, সরকার দলীয় প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াত আইভী, বিএনপি থেকে আসা স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার, ইসলামী আন্দোলনের মাসুম বিল্লাহ, কল্যাণ পার্টির রাশেদ ফেরদৌস, খেলাফত মজলিসের সিরাজুল মামুন, খেলাফত আন্দোলনের জসিম উদ্দিন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী বাবু।
গত শুক্রবার পর্যন্ত প্রচার-প্রচারণার শেষ দিন ছিলো। নির্ধারিত সময় পর্যন্ত প্রচার-প্রচারণায় ঘাম ঝরিয়েছেন তারা। নানা প্রতিশ্রুতিতে আকৃষ্ট করতে চেয়েছেন ভোটারদের। এর মধ্যে আলাচনায় থাকা নৌকার প্রার্থী আইভী এবং হাতি প্রতীকের প্রার্থী তৈমূরকে ভাবা হচ্ছে হেভিওয়েট প্রার্থী। মেয়র পদে তাদের মধ্যেই হবে প্রধান লড়াই। এ ছাড়া সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৪৮ এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৩২ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ৫ লাখ ১৭ হাজার ৩৬১ জন। এরমধ্যে ২ লাখ ৫৯ হাজার ৮৩৯ জন পুরুষ ও ২ লাখ ৫৭ হাজার ৫১৭ জন নারী ভোটার রয়েছে। অন্যদিকে সদর, বন্দর ও সিদ্ধিরগঞ্জ মিলিয়ে মোট ভোটকেন্দ্র রয়েছে ১৯২টি। এসব কেন্দ্রসহ গোটা সিটি এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা হবে বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম। তিনি বলেন, প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে পুলিশ সদস্যরা তাদের যথাযত দায়িত্ব পালন করবেন। তাদের সাথে থাকবেন আনসার সদস্যরা। পাশাপাশি পুলিশের দুইটি বিশেষায়িত ইউনিট আর্মড পুলিশ ও র্যাব কাজ করবেন। তাছাড়া প্যারা মিলেটারী ফোর্স বিজিবিও তাদের সাথে রয়েছেন। জায়েদুল আলম বলেন, ‘প্রতিটি কেন্দ্রে ৫-৬ জন পুলিশ সদস্যের নেতৃত্ব ১৫ থেকে ১৭ জন আনসার সদস্য থাকবে। সব মিলিয়ে প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে ২২ থেকে ২৫ জন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে ৩টি করে আর্মড পুলিশের মোবাইল টিম থাকবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে স্ট্রাইকিং রিজার্ভ ফোর্স এবং র্যাবের মোবাইল টিম থাকবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে ১ প্লাটুন বিজিবি রাখার চেষ্টা করবো। আমরা ভোট কেন্দ্র সহ পাড়া মহল্লাগুলো নিরাপত্তার চাদরে নিয়ে আসবো।’ পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘আমাদের চাহিদার পেক্ষিতে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আরও ২৭ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়েছেন। সেই সাথে ১৪জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভোটের দিন সকাল থেকে কাজ করবেন। যাতে করে নির্বাচনে কেউ কোন অরাজকতা করতে না পারে।
নির্বাচনের রিটার্নি কর্মকর্তা মাহফুজা আক্তার বলেন, ‘আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের কঠোর প্রহরায় ভোট কেন্দ্রগুলোতে ইভিএমসহ অন্যান্য সরঞ্জাম পাঠানো হচ্ছে। একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে আমরা বদ্ধপরিকর। এদিকে, উৎসব-উত্তেজনার এই ভোটে কার গলায় ঝুলবে বিজয়ের মালা, তা নিয়েই চলছে নানা বিচার বিশ্লষণ।’