নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। শুক্রবার (২৩ নভেম্বর) সকালে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নর জবারে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সংখ্যাতত্ত্বের হিসাবে সার্বিকভাবে এটুকু বলতে পারি, হিসাবের অংকে আগামী নির্বাচনে আমাদের দল ও জোট বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে। তবে এসব কথা বলা উচিত নয়, এতে জনগণকে অসম্মান করা হয়। জনগণ আমাদের যত আসনে ভোট দেবে আমরা ততই পাবো। আমরা কোনও সংখ্যাতত্ত্বে বিশ্বাস করতে চাই না। কে কত আসন পাবে দেশের জনগণই তা ঠিক করবে।’
বিএনপি স্বপ্নবিলাসী দল এমন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এর আগে নির্বাচনে বিএনপি আমাদের ৩০ আসন দিয়েছিল, কিন্তু নিজেরাই পেয়েছিল ৩০ আসন। আবার তাদের কেউ কেউ আমাদের ১০ আসনও দিয়েছিল। নয়াপল্টনে বিএনপি অফিসের সামনে যে জোয়ার দেখা যাচ্ছে, সেটা শুধু দলীয় কার্যালয়ের সামনেই, সারাদেশে নয়। এই সাময়িক জোয়ারে ক্ষমতার রঙিন খোয়াব যদি বিএনপি নেতারা দেখেন, তাহলে ৩০ ডিসেম্বর টের পাবেন।’
নির্বাচনকে ঘিরে বিএনপি নেতাদের হয়রানি করা হচ্ছে এমন অভিযোগের বিষয়ে করা এক প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তাদের নয়াপল্টনে একজন আবাসিক প্রতিনিধি রয়েছে। এ ধরনের আজগুবি অভিযোগ তিনি করেন। এটা হচ্ছে মিথ্যাচার প্রডাকশনের জন্যই। জনমত পক্ষে না থাকলে প্রশাসন ও স্ট্যাব্লিশমেন্ট দিয়ে কোনও ম্যাকানিজম কাজ করবে না।’
বিএনপির নাশকতা নিয়ে শঙ্কা করছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নাশকতা করা বিএনপির পুরনো স্বভাব। ২০১৪ সালে তারা যে নাশকতা করেছে, যে ভয়াবহ চিত্র তারা দেখিয়েছে। শীতকালে নির্বাচন হওয়ায় নাশকতার শঙ্কা থাকেই।’
যশোর জেলা বিএনপির সভাপতির লাশ বুড়িগঙ্গা নদী থেকে উদ্ধারে বিএনপির বক্তব্য প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদেরের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সেটাকে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল বলে ইঙ্গিত করেন তিনি। কাদের বলেন, “যশোরের কোনও প্রার্থীর লাশ বুড়িগঙ্গা নদীতে, এর মানে তো ‘ডাল মে কুচ কালা হ্যায়’। এটা ওদের নিজস্ব কোন্দলের কারণেও হতে পারে। কারও সঙ্গে কোন্দলের কারণে তারা উনাকে মারতে পারে। কিন্তু সেখানে আওয়ামী লীগের কী স্বার্থ থাকতে পারে। যশোরের মনোনয়ন প্রত্যাশীর লাশ বুড়িগঙ্গায় কেন পাওয়া গেল তা খতিয়ে দেখতে হবে। তাদেরও তো অনেক মনোনয়ন প্রত্যাশী আছে।’
শরিকদের সঙ্গে আসন ভাগ নিয়ে কোনও টানাপড়েন হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আসন নিয়ে দরকষাকষি তো হবেই। এটা গণতন্ত্রের অংশ। তবে কোনও টানাপড়েন নেই। তবে এখানে তো বানরের পিঠা ভাগ করে লাভ নেই। তবে সবকিছুই আমাদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই আছে। এখানে কে কত সিটে জিততে পারবে, এটাই হলো আমাদের প্রাইম কনসিডারেশন। যারা ইলেক্টেবল ও উইনেবল তাদেরই আমরা সিলেক্ট করবো।’
মহাজোটের সঙ্গে আসন বণ্টন চূড়ান্ত হয়েছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মৌখিকভাবে হয়েছে। যখন ঘোষণা হয়ে যাবে, তখন তো আপনারা পেয়ে যাবেন।’
শরিকদের কে কত আসন পেতে পারে সে বিষয়ে কী আভাস দেওয়া যায়- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা আমি একটা অনুমান করতে পারি। আমি বারবার বলেছি প্রার্থীকে ইলেক্টেবল হতে হবে, উইনেবল হতে হবে। সে ক্ষেত্রে ৬৫-৭০-এর জায়গায় ২/৪টা বাড়তেও পারে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক শ ম রেজাউল করিম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সবুর, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় সদস্য ও সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমেদ কামরান, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা আবু কাউসার প্রমুখ।