আজ সোমবার, ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

স্ত্রী-সন্তানসহ ৩ জনকে গুলি করে হত্যা,এএসআই আটক

অনলাইন ডেস্ক:

কুষ্টিয়া শহরের কাস্টমস মোড়ে প্রকাশ্যে তিনজনকে গুলি করে হত‌্যা করা হয়েছে। এ হত‌্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সৌমেন মিত্রকে আটক করা হয়েছে। সৌমেন খুলনার ফুলতলা থানায় এএসআই হিসেবে কর্মরত আছেন।

রোববার (১৩ জুন) বেলা ১১টায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- সৌমেনের দ্বিতীয় স্ত্রী আসমা আক্তার (২৫), আসমার আগের ঘরের সন্তান রবিন (৫) এবং শাকিল (২৮) নামে আরেকজন। নিহত শাকিল বিকাশের ডিস্ট্রিবিউশন সেলস অফিসার পদে (ডিএসও) চাকরি করতেন। জেলার কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের শাওতা গ্রামের মেসবাহ আলীর ছেলে তিনি। আসমার বাড়িও একই উপজেলায়। স্বামীর সাথে সম্পর্কচ্ছেদের পর আসমা তার ছেলে রবিনকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে থাকছিলেন।

কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) খায়রুল আলম সাংবাদিকদের জানান, শাকিলের সঙ্গে আসমার বিয়ে-বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। হত্যায় ব্যবহৃত পিস্তলটি জব্দ করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, আসমা তার শিশু সন্তানকে নিয়ে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের কাস্টম মোড়ে তিন তলা একটি ভবনের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। তার সঙ্গে ছিলেন বিকাশ কর্মী শাকিলও। হঠাৎ সেখানে পৌঁছে সৌমেন পিস্তল বের করে আসমার মাথায় গুলি করেন। পাশে থাকা শাকিলের মাথায়ও গুলি করেন তিনি। আসমার ছেলে রবিন পালাতে গেলে তাকে ধরে মাথায় গুলি করা হয়। এ সময় আশপাশের লোকজন সৌমেনকে ধরতে গেলে তিনি দৌড়ে তিনতলা ভবনের ভেতরে ঢুকে পড়েন। পরে লোকজন ভবনটি লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে শুরু করেন। একপর্যায়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সৌমেনকে আটক করে। গুলিবিদ্ধদের উদ্ধার করে পাঠানো হয় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকেরা তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গুলিবিদ্ধ তিনজনের মধ্যে প্রথমে মা ও তার শিশু মারা যায়। মায়ের বয়স আনুমানিক ৩৫ বছর। আর শিশুর বয়স ৪ বছর। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ এক যুবককে হাসপাতালে নিলে তিনিও মারা যান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার একজন কর্মকর্তা জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এএসআই সৌমেন গুলি চালানোর কথা স্বীকার করেছেন। তবে এর কারণ সম্পর্কে পরিষ্কার তথ্য এখনও দেননি।

পুলিশ সূত্র জানায়, কুষ্টিয়াতে হালসা ফাঁড়ির দায়িত্বে থাকার সময়ে সৌমেনের সঙ্গে বিকাশ কর্মী শাকিলের পরিচয় হয়। তাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল।

পুলিশ জানায়, এএসআই সৌমেনের সঙ্গে দেড় বছর আগে আসমার পরিচয় ও প্রেমের সম্পর্ক হয়। এরপর তারা বিয়ে করেন। তবে ধর্মীয় কারণে এই সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছিল। সম্প্রতি সৌমেন পরিবারের ইচ্ছায় আরেকটি বিয়ে করেন। এর আগে কুষ্টিয়া থেকে বদলি হয়ে তিনি খুলনার ফুলবাড়িয়া চলে যান।