সংবাদচর্চা রিপোর্ট: নারায়ণগঞ্জ ঢাকার নিকটবর্তী গুরুত্বপূর্ণ জেলা। জাতীয় নির্বাচন আসলেই এখানে মৌসুমী নেতারা মাথাচারা দিয়ে ওঠে। যোগ্যতা থাকুক বা না থাকুক, কোন জনসমর্থন আছে কি না তা চিন্তা না করে নিজেকে এমপি প্রার্থী ঘোষণা করে বসে।
সারা বছর মৌসুমী নেতাদের কোন খবর থাকে না। মাঠের নেতাকর্মীদের খোজ খরব রাখে না। নির্বাচন আসলে টাকা কামানোর জন্য লেভাজ ধরে। কেউ কেউ ভোটের ব্যাপারী সাজে।
নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নামে মিথ্যাচার শুরু করে দিয়েছে। মৌসুমী নেতারা অনেকেই অবৈধ পথে টাকা উপার্জন করে ব্যানার, সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক, পত্রিকার মাধ্যমে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দেয়।
সরেজমিনে দেখা যায় নারায়গঞ্জ মোট ৫ টি আসন রয়েছে। বর্তমানে ৩টি তে আ.লীগ ২টিতে জাতীয় পাটি সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছে।
নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে বর্তমানে সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী। তিনি একজন উচ্চ শিক্ষিত ব্যক্তি। রণাঙ্গণের খেতাব প্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা। দেশের সুনাম ধন্য ব্যবসীয় ও শিল্পপতি।তিনি বর্তমান সরকারের আমলে রূপগঞ্জে চেহারা পাল্টে দিয়েছেন। ফ্লাইওভার, শীতলক্ষা নদীতে সেতু নির্মাণ, স্কুল কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসাসহ সারা উপজেলায় রাস্তা ঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন করে দিয়েছে। আ.লীগের নেতাকর্মী সহ রূপগঞ্জ বাসির সুখে দুঃখে সব সময় পাশে দাড়িয়েছে। আ.লীগকে শক্তিশালী রাখতে প্রায় প্রতিদিন রূপগঞ্জ উপজেলার আ.লীগের নেতা কর্মীদের পাশে সময় দিচ্ছেন।
দেখা গেছে রূপগঞ্জে কিছু মৌসুমী নেতা যোগ্যতা জনসমর্থন না থাকা সত্বেও নিজেদের এমপি প্রার্থী হিসেবে দাবি করে। বর্তমান সরকারের উন্নয়ন চিত্র জনগণের সামনে তুলে না ধরে নিজেদের বলয় তৈরী করার জন্য অপপ্রচার চালাচ্ছে। মৌসুমী নেতাদের অপপ্রচার দেখে স্থানীয় সাংসদ গোলাম দস্তগীর গাজী অস্বস্তি বোধ করছে।
নারায়গঞ্জ-২ আসনে বর্তমানে সংসদ সদস্য বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম বাবু। তিনি তৃণমূল থেকে নেতৃত্ব শিখে এসেছে। তিনি বর্তমান সরকারের আমলে রাস্তা-ঘাট, স্কুল , কলেজসহ ব্যাপক অবকাঠামোগত উন্নয়ন করেছে। একটি মহল সারা বছর মাঠে না থেকে হঠাৎ করে উড়ে এসে জুড়ে বসে নিজেকে এমপি প্রার্থী দাবি করে নিজ দলের মধ্যে কোন্দল সৃষ্টি করে দিয়েছে।
নারায়গঞ্জ-৩ আসনে বর্তমান এমপি জাতীয় পার্টির যুগ্মমহাসচিব লিয়াকত হোসেন খোকা। গত নির্বাচনে জাতীয় পাটিকে অংশগ্রহণ নেওয়ার জন্য তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তার জন্য আ.লীগ হাইকমান্ড সোনারগা আসনটি তাকে ছেড়ে দেয়। তিনি এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করেছে। জাতীয় পাটি ও আ.লীগের কিছু সিনিয়র নেতা কেন্দ্রের নির্দেশ ছাড়াই নিজেকে এমপি প্রার্থী হিসেবে দাবি করে সাধারণ জনগণের মাঝে বিভ্রন্তি ছড়াচ্ছে যা দেখে বিব্রত বোধ করছে স্থানীয় সাংসদের সমর্থকরা।
নারায়ণগঞ্জ-৪ বতমান এমপি ঐতিবাহি ওসমান পরিবারের সদস্য শামিম ওসমান। তিনি ছাত্র জীবন থেকে আ.লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। বিভিন্ন সময়ে বিএনপি জামায়াতের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। অত্যাচর সহ্য করেছেন। মাদক সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে তার কঠোর অবস্থান।।তা ছাড়া কিছু বির্তকীত কর্মকান্ডকে ইস্যু করে এক শ্রেণীর লোক তার নেত্বের পরিবর্তন চায়। এই আসনে একাধিক প্রার্থীর গুঞ্জন শুনা যাচ্ছে। যা শামীম শিবিরে বিব্রতকর অবস্থা সৃষ্টি করেছে।
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বর্তমান এমপি ওসমান পরিবারের আরেক সদস্য জাতীয় পার্টির নেতা সেলিম ওসমান। প্রভাব শালী এই নেতার সাথে হোসেন মোহাম্মদ এরশাদের গভীর সম্পর্ক থাকার কারণে এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করতে পেরেছে। মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে সদর আসনটি জাতীয় পাটিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। সেই ছেড়ে দেওয়া আসনে আ.লীগের নেতারা এমপি প্রার্থী ঘোষণা দিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছে। জানা গেছে আ.লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের প্রচারণা তিনি মেনে নিতে পারছেন না। তিনি আ.লীগর নেতার্মীদের বিভিন্ন বক্তব্যের পাল্টা জবাব দিচ্ছেন।
তাই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন এক শ্রেণীর মৌসুমী হাইব্রিড নেতারা নির্বাচনকে সামনে রেখে বিশেষ সুবিধা আদায়ের জন্য নিজেদেরকে জাতীয় নির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেয়, যা প্রতিবারই জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানিয় সাংসদদের অস্বস্থিতে ফেলে।