মঙ্গলবার বসতে পারে পদ্মা সেতুর দ্বিতীয় স্প্যান: চলছে জোর প্রস্তুতি
শহিদুল ইসলাম লিখন,
প্রায় সাড়ে তিন মাস পরে পদ্মা সেতুতে দ্বিতীয় স্প্যান পিয়ারের ওপর বসানোর অপেক্ষায় সেতু কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ২৩ জানুয়ারি মঙ্গলবার বসানো জন্যে জোর প্রস্তুতি চালাচ্ছে প্রকৌশলীরা। দ্বিতীয় স্প্যান বসানোর জন্য ৭বি স্প্যানটি নিয়ে গতকাল শনিবার সকাল ৯টার দিকে জাজিরা প্রান্তের দিকে রওনা দেয় বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভাসমান ক্রেন। পদ্মা সেতু প্রকল্পের মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও মুন্সিগঞ্জ এলাকার একাধিক প্রকৌশলী এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, তিন হাজার ৬০০ কিলোজুল ধারণক্ষমতার তিয়ান ই (ঞরধহ ণর) ক্রেন ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যরে স্প্যান নিয়ে প্রায় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে জাজিরা প্রান্তে পৌঁছাবে। স্প্যানটির ওজন তিন হাজার ১৪০ টন। তবে পিয়ারে বসানোর পর এতে আরো যন্ত্রপাতি লাগানো হবে। তখন এর ওজন আরো বাড়বে। তাই শেষ মুর্হুতের সকল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে প্রকৌশলীরা।তবে সহকারী প্রকৌশলী (মূল সেতু) হুমায়ুন কবীর বলেন, শুক্রবারই ৭বি স্প্যান নিয়ে ক্রেনটি জাজিরা প্রান্তে রওনা দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু অনিবার্য কারণে তা স্থগিত করা হয়েছে। এই কারে শনিবার সকালে স্প্যান নিয়ে জাজিরা প্রান্তের দিকে রওনা দেয়। যা হয়ত সোমবার সন্ধ্যার মধ্যে জাজিরা প্রান্তে পৌছাবে। তিনি আরো বলেন, ক্রেন এবং স্প্যানের ভর অনেক বেশি। তাই অত্যন্ত ধীরগতিতে ক্রেনটি চলবে যেন ভরবেগ কম হয়। আগামী ২৩ জানুয়ারি স্প্যানটি পিয়ারে বসানোর প্রস্তুতি চলছে।
এব্যাপারে সহকারী প্রকৌশলী (মূল সেতু) আহমেদ আহসান উল্লাহ মজুমদার মুঠোফোনে জানান, ৩৮ ও ৩৯ নম্বর পিয়ারের ওপর বসানো হবে দ্বিতীয় স্প্যান বা স্প্যান ৭বি। এ লক্ষ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। নদীতে যথেষ্ট নাব্যতা ছিল না। ক্রেন চলাচলের জন্য প্রয়োজনীয় নাব্যতা ৫ মিটার হলেও নাব্যতা ছিল ৩ মিটার। তাই তিনটি ড্রেজার দিয়ে ড্রেজিং করে নাব্যতা তৈরি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৩০ সেপ্টেম্বর প্রথম স্প্যানটি জাজিরা প্রান্তের ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিয়ারের ওপর বসানো হয়। এরপর বিভিন্ন সমস্যার কারণে আর কোনো স্প্যান বসানো সম্ভব হয়নি। দ্বিতীয় স্প্যানটি বসানো হলে সেতুর ৩০০ মিটার দৃশ্যমান হবে।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী জাতীয় সংসদে বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, পদ্মা সেতু প্রকল্পের সার্বিক ভৌত অগ্রগতি ৫০ শতাংশ। ইতোমধ্যে সেতুর একটি স্প্যান বসানো হয়েছে। পাইল ড্রাইভিং এবং পিয়ার কলামের পাশাপাশি অবশিষ্ট স্প্যানগুলো পর্যায়ক্রমে বসানোর মাধ্যমে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর নাগাদ সেতুর নির্মাণকাজ সম্পন্ন করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
এ ব্যাপারে মাদারীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিয়াজউদ্দিন খান বলেন, দ্বিতীয় স্প্যান বসালে সেতুর দৃশ্যমান আরো অগ্রগতি দেখা যাবে। এভাবে এক এক করে পিলারে স্প্যান বসলে আমাদের কাঙ্খিত স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে। মাদারীপুরসহ দক্ষিণাঞ্চল আরো উন্নতি হয়ে সিঙ্গাপুর শহরের মতো সৌন্দর্যবর্ধন হবে।