আজ শুক্রবার, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

জেলা জুড়ে সড়ক দুর্ঘটনার বিচারে ধীরগতি

দুর্ঘটনার পর চালক-হেলপার পালিয়ে যায়
গ্রেফতারের জন্য কোন অগ্রগতি থাকে না পুলিশের : সুজন

সড়কে দুর্ঘটনায় পলাতকের সংখ্যা বেশি
চালকরা যানবাহন মালিকের সহযোগিতায়
আদালতে আত্নসমর্পণ করে : ওসি কাঁচ হাইওয়ে

চালক পলাতক থাকলে গাড়ির মালিকের সহযোগিতায়
গ্রেফতারের চেষ্টা করা হয়: : সহকারী পুলিশ সুপার (ট্রাফিক)

সংবাদচর্চা রিপোর্ট
ঘাতক নাকি ট্রাক। ট্রাকের কি প্রান আছে। পুলিশ বলে ঘাতক ট্রাককে আটক করা হয়েছে। দুইজন মানুষকে চাপা দিয়া মাইরা ফেললো আর পুলিশ গর্বের সাথে বলে ট্রাক আটক করছে। ট্রাক ধুয়ে পানি খান পুলিশ ভায়েরা। গতকাল নারায়ণগঞ্জ-শিমরাইল-ডেমরা সড়ক পথযাত্রী গোলাম পারভেজের কাছে দুর্ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ কথা বলেন। এছাড়া জানা গেছে, নিরাপত্তা নেই ঢাকা-চট্রগাম মহাসড়কে। একের পর এক দূর্ঘটনায় বাবার সামনে ছেলে, স্বামীর সামনে স্ত্রী, মায়ের সামনে মেয়েকে চাপা দিয়ে যানবাহন ও চালক-হেলপার পালিয়ে যায়।

সুশাসনের জন্য নাগরিক নারায়ণগঞ্জ মহানগর কমিটির যুগ্ম সম্পাদক টুটি আহমেদ বলেন, সড়কে দুর্ঘটনার পর যে সকল চালক-হেলপার পালিয়ে যায় পরবর্তিতে তাদের আটক বা গ্রেফতারের কোন অগ্রগতি থাকে না পুলিশের। তাই চালক ও হেলপারা সহজ অবলম্বন করে পালিয়ে যেতে। আমরা পুলিশের অগ্রগতি প্রত্যাশা করি।

তবে হাইওয়ে পুলিশের কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাইয়ুম আলী সরদার দৈনিক সংবাদচর্চা বলেন, দুর্ঘটনায় ঘটনায় মামলা হওয়ার পর যানবাহনের মালিকের সহযোগিতায় নাম-ঠিকান নিয়ে আটকের জন্য ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়। তবে পলাতক চালকরা মালিকের সহযোগিতায় আদালতে আতœসর্মপন করে থাকে। সড়কে দূর্ঘটনায় পলাতকের সংখ্যা বেশী তবে আমরা চেষ্টা করি গ্রেফতারের জন্য।
এ বিষযে সহকারী পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) সালেউদ্দিন আহমেদ দৈনিক সংবাদচর্চা বলেন, যদি সড়ক দুর্ঘটনায় মামলা হয় তাহলে একদিন না একদিন সে গ্রেফতার হবেই। দুর্ঘটনায় পর যারা পালিয়ে যায় তাদের কে গাড়ির নাম্বার দেখে গাড়ির মালিকের সহযোগিতায় চালক ও হেলপারের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করে গ্রেফতারের চেষ্টা চলে । পলাতক থাকলে পলাতক রেখে প্রতিবেদন দেয়া হয়।

এদিকে সিদ্ধিরগঞ্জে ট্রাক চাপায় এক ব্যবসায়ীসহ দুইজন নিহত হয়েছে। নিহতরা হলেন- রিক্সা চালক আকাশ (১৭) ও রিক্সার যাত্রী ব্যবসায়ী নূর হোসেন (৫০)। এ ঘটনায় নিহত নূর হোসেনের ছেলে আহত হয়েছেন। গত বৃহষ্পতিবার রাত সাড়ে বারোটায় সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার নারায়ণগঞ্জ-শিমরাইল-ডেমরা সড়ক এলাকার বিদ্যুত অফিসের সামনে এ দূর্ঘটনা ঘটে। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বাদশা আলম জানান, রিক্সাটি নারায়ণগঞ্জ-শিমরাইল-ডেমরা সড়কের শিমরাইলের বিদ্যুত অফিসের সামনে পৌঁছলে পেছন থেকে একটি ট্রাক ওই রিক্সাকে চাপা দেয়। এতে রিক্সাটি চুর্ণ-বিচুর্ণ হয়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই রিক্সাচালক আকাশ ও যাত্রী নূর হোসেন নিহত হন। একই ঘটনায় নূর হোসেনের ছেলে আহত হয়েছেন। তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তিনি আরো জানান, ঘটনার পর ট্রাকটির চালক ও হেলপার পালিয়ে যায়। তবে ঘাতক ট্রাকটিকে আটক করা হয়েছে। নিহত মুরগী ব্যবসায়ী নূর হোসেন জেলার সোনারগাঁ উপজেলার মঞ্জুরখোলা গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে। নিহত রিক্সা চালক আকাশ নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের সাতগ্রামের মাজাহারুলের ছেলে।
দূর্ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মীর শাহিন শাহ পারভেজ জানান, নিহত দুইজন ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে ময়না তদন্তের জন্য।

অপরদিকে গত ২১ মার্চ রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কেরপাড়া এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত হয় সোনারগাঁ উপজেলার সনমান্দি ইউনিয়নের দড়িকান্দির জসিম উদ্দিনের স্ত্রী সানজিদা আক্তার (২৯) ও মেয়ে জান্নাত (৭)।
আহত জসিম উদ্দিনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এছাড়া মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় তাহমিনা আক্তার শিউলি (৪৫) নামের এক স্কুল শিক্ষিকা নিহত হয়। তবে পুলিশ ঘাতক ট্রাকটিকে আটক করলেও চালক ও হেলপার পালিয়ে যায়।
(১৪ মার্চ) বিকেলে ৪টায় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরানো সড়কের পাগলা এলাকায় আনন্দ পরিবহনের একটি বাসের চাপায় কামাল হোসেন (৩২) নামের এক ব্যাটারি চালিত রিকশাচালক নিহত হয়েছে।

দিন যতই যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জ জেলা জুড়ে ততই দুঘটনার হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই দুর্ঘটনার বিচার হচ্ছে ধীর গতিতে। আবার অনেকে ক্ষমতার দাপটে বিচারের হাত থেকে রেহায় পেয়ে যায়। সড়ক দুর্ঘটনার শিকার পরিবার গুলো ন্যায় বিচার পায় না। অসহায় জীবন যাপন করতে হয় দুর্ঘটনার শিকার ব্যক্তির পরিবার গুলোকে।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ