নিজস্ব প্রতিবেদক:
নারায়ণগঞ্জে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) ।
শনিবার (৯ মার্চ) বিকাল ৫টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ ও শহরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা বাসদের সমন্বয়ক নিখিল দাসের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৫ ওয়ার্ড কাউন্সিলর অসিত বরণ বিশ্বাস, বাসদ জেলা ফোরামের সদস্য আবু নাঈম খান বিপ্লব, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদ, বাসদ সোনারগাঁ উপজেলার সমন্বয়ক বেলায়েত হোসেন, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম।
নেতৃবৃন্দ বলেন, কোন যুক্তি ছাড়াই আবারও গ্যাসের দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা করছে সরকার। ইতিমধ্যে জ্বালানী প্রতিমন্ত্রী দাম বাড়ানোর অভিমত ব্যক্ত করেছেন। আগামী ১১ মার্চ বিইআরসির গণশুনানির মাধ্যমে দাম বৃদ্ধির প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। এমনিতে এক বার্নারের ক্ষেত্রে ৮৫ ঘনমিটার এবং দুই বার্নারের ক্ষেত্রে ৯২ ঘনমিটার গ্যাস ব্যবহারের দাম নেয়া হয়। কিন্তু তিতাস গ্যাস কোম্পানির হিসাব অনুযায়ী এক বার্নারে গ্যাস সরবরাহ হয় ৪৫ ঘনমিটার এবং দুই বার্নারে গ্যাস সরবরাহ হয় ৪৭ ঘনমিটার। অর্থাৎ গ্যাসের দাম নেয়া হয় দ্বিগুনেরও বেশি। সারাদেশে গৃহস্থালিসহ শিল্প কারখানার জন্য গ্যাস সরবরাহ নেই। বিকল্প হিসাবে মানুষ সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার করে। কিন্তু সিলিন্ডার ব্যবসায়ীর উপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই। ফলে জেলায়, উপজেলায় বেশি দামে গ্যাস কিনতে বাধ্য হচ্ছে সাধারণ মানুষ। ১২ কেজির ১টি সিলিন্ডারে গ্যাস থাকে ১৬ ঘনমিটার। বর্তমানে সিএনজি পাম্পে প্রতি ঘনমিটার গ্যাস বিক্রি হয় ৩৮ টাকায়। তাহলে ১ সিলিন্ডার গ্যাসের দাম হওয়ার কথা ৬০৮ টাকা। বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১১০০/১২০০ টাকায়। এসব বিষয়ে সরকার ও বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) নীরব ভুমিকা পালন করে। অথচ রেগুলেটরি কমিশন এর দায়িত্ব জনগণের স্বার্থ রক্ষা করা। কিন্তু কমিশন সরকার ও কোম্পানীর স্বার্থে গ্যাসের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে তৎপর। নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, সরকারের ভুলনীতি ও দুর্নীতির দায় জনগণ নেবে না। দেশের গ্যাসক্ষেত্রগুলো বিদেশী কোম্পানীদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। এই বিদেশী কোম্পানীরাই মাগুরছড়া ও টেংরাটিলায় অগ্নিকা- ঘটিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট করেছে, মেরুদ-হীন সরকার ক্ষতিপূরণও নিতে পারেনি। গ্যাস উন্নয়ন তহবিলের কয়েক হাজার কোটি টাকা অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। আবার গ্যাসের দাম বাড়ালে অর্থনীতিতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, ক্ষতিগ্রস্ত হবে সাধারণ মানুষ।
নেতৃবৃন্দ গ্যাসবৃদ্ধির সরকারি ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।