আজ শুক্রবার, ১৫ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৮শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সোনারগাঁয়ে মনোনয়ন জমা দিতে এসে আ’লীগের দুই গ্রুপের হাতাহাতি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিতে এসে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোশারফ হোসেন ও বিদ্রোহী প্রার্থী মাহফুজুর রহমান কালামের সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। মাহফুজুর রহমান কালাম সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক।

সোমবার (৪ মার্চ) বিকেলে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনে সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সোনারগাঁ উপজেলার আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এদিকে ঘটনার পর সোনারগাঁ প্রেসক্লাবে আওয়ামলীগ প্রার্থী মোশারফ হোসেনের পক্ষে তার ভাতিজা সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল কায়সার ও বিদ্রোহী প্রার্থী মাহফুজুর রহমান কালাম সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার জন্য একে অন্যকে দোষারোপ করেছেন।

জানা যায়, সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আগামী ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত হওয়ার লক্ষ্যে গতকাল সোমবার বিকেল ৫টায় মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় ছিল। বিকেল ৪টার দিকে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মোশারফ হোসেন ও তার সমর্থকরা মনোনয়ন পত্র জমা দিতে আসেন। মোশারফ হোসেনের মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়া শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সুস্থতার জন্য দোয়া করছিলেন। দোয়া চলাকালীন সময়ে স্লোগান নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম তার কর্মী সমর্থকদের নিয়ে মনোনয়ন পত্র জমা দিতে আসেন। এ সময় উভয় পক্ষের নেতাকর্মীরা তাদের নেতাদের পক্ষে স্লোগান দিতে থাকে। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

এ সময় বিদ্রোহী প্রার্থী মাহফুজুর রহমান কালামে সমর্থক সোনারগাঁ পৌরসভা ছাত্রলীগের সভাপতি মাহবুবুর রহমান রবিন ও বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট পৌর সভা কমিটির সভাপতি রিয়াদ হোসেন রনির নেতৃত্বে মোশারফ সমর্থদের উপর এ হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ করেন আবদুল্লাহ আল কায়সার। হামলায় মোগরাপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল রহমান সজিব, যুবলীগ কর্মী মোহন, রঞ্জিত, মনা ও হারুন আহত হয়েছেন বলেও দাবি করেন তিনি। এ ঘটনায় সোনারগাঁ থানায় অভিযোগ দায়ের করা হবে বলে আবদুল্লাহ আল কায়সার সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন।

তিনি আরো জানান, নেত্রী আমাদেরকে নৌকা প্রতীক বরাদ্দ দিয়েছেন। সুতরাং আমরা নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।

এদিকে বিদ্রোহী প্রার্থী মাহফুজুর রহমান কালাম প্রেসক্লাবে পৃথক সংবাদ সম্মেলন করে জানান, মোশারফ হোসেনের সমর্থকরা মনোনয়ন জমা দিতে এসে দীর্ঘ সময় নির্বাচন অফিস ও উপজেলা চত্বরে অবস্থান করছিল। আমি যাতে নির্দিষ্ট সময়ে মনোনয়ন জমা দিতে না পারি সেজন্য তারা পরিকল্পিতভাবে আমাকে ও আমার সমর্থকদের বাধা সৃষ্টি করে। বাঁধা পেয়ে কর্মী সমর্থকরা উত্তেজিত হয়ে এটি প্রতিহত করেছে। তবে এ অনাকাঙ্খিত ঘটনা খুবই দুঃখজনক। আমি স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করছি। আমি চাই সোনারগাঁয়ে একটি সুষ্ঠ, শান্তিপূর্ন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রত্যাশা করছি। এজন্য সবার সহযোগিতা চাই।

মোশারফ সমর্থকদের অভিযোগ, উপজেলা চত্বরে দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন সামনে উপস্থিত থাকলেও নিরব ভূমিকায় ছিলেন। পুলিশ চেষ্টা করলে সংঘর্ষের ঘটনাটি প্রাথমিক অবস্থায় নিরসন করতে পারতেন।

সোনারগাঁ থানার ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, হামলার ঘটনাটি অনাকাঙ্খিত। আমরা তাৎক্ষনিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এনেছি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী অফিসার অঞ্জন কুমার সরকার বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে একটি সামান্য হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। পরে আমি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নিয়ে উভয় পক্ষকে শান্ত করেছি।